Header Border

ঢাকা, বুধবার, ১১ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৭শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (শরৎকাল)
শিরোনাম :
আল্লাহর আইন কায়েম হলে সকলে সমান আলো পায়—অধ্যাপক অধ্যাপক মোঃ আবুল হোসেন এবার মোদির পদত্যাগের ‘একদফা’ দাবি প্রতীকসহ নিবন্ধন পেল নুরের গণঅধিকার পরিষদ বন্যার্তদের মাঝে ফুডপ্যাক বিতরণ ইঞ্জিঃ ইমতিয়াজ সিদ্দিকী তোহার প্রতিহিংসা পরিহার করে সুন্দর সমৃদ্ধ দেশ  গড়তে সবাই এগিয়ে আসুন: ইঞ্জিঃ মমিনুল হক শেখ হাসিনাকে ফেরত চাইতে পারে বাংলাদেশ: রয়টার্সকে উপদেষ্টা শাহরাস্তিতে বানবাসীদের মাঝে পিসবের ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ চাঁদপুরে সাবেক মন্ত্রী-এমপিসহ ৬০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা শাহরাস্তি প্রেসক্লাবের উদ্যোগে সপ্তাহব্যাপী বর্ন্যাতদের মাঝে উপহার সামগ্রী বিতরণ নেপালকে উড়িয়ে সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

শাওয়াল মাসের ৬ রোজার ফজিলত ও নিয়মকানুন

বিশাল এক রহমতের মাস ‘রমজান’ আমাদের মাঝ থেকে চলে গেল। প্রতিটি ধর্মপ্রাণ মুসলমান মাত্রই ১২ মাসের মধ্যে এই রমজান মাসের জন্য অপেক্ষা করেন। কারণ এ মাসের রহমত আর বরকতের পরিমাণ বহুগুণ বেশী। তাছাড়া রোজার পুরষ্কার আল্লাহ তা’আলা নিজ হাতে প্রদান করবেন। হাদিসে আছে “সিয়াম আমারই জন্য এবং এর পুরস্কার আমি নিজেই দান করব।” (সহিহ বুখারী)।

এক মাসে রোজা রাখার উপহারস্বরূপ আল্লাহ সুবাহানাতাআলা আমাদের এত নেয়ামত দিবেন। তাহলে একবার চিন্তা করুন তো রোজা রাখবার কারণে যে ফজিলত ও রহমত আমরা পাই সেটা যদি বাকি ১১ মাসে পাওয়া যেত তাহলে কতই না ভাল হতো। কিন্তু ৩৬৫ দিন রোজা রাখা আমাদের পক্ষে সম্ভব না তাছাড়া আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যাতীত কোন কাজের ভার দেন না। কোরআনে আছে,  “আল্লাহ তোমাদের থেকে (বিধান) সহজ করতে চান, আর মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে দুর্বল করে।” (সুরা নিসা : ২৮)। তাই মন খারাপ বা হতাশ হবার কিছু নেই। রাসুল (সাঃ) এর সহজ সমাধান আমাদের দিয়ে গেছেন।

প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) বলেছেন, “যারা রমজানে রোজা পালন করবে এবং শাওয়ালে আরও ছয়টি রোজা রাখবে; তারা যেন পূর্ণ বছরই রোজা পালন করল।” (মুসলিম: ১১৬৪; আবুদাউদ: ২৪৩৩; তিরমিজি, নাসায়ি, ইবনে মাজাহ, সহিহ্-আলবানি)। চান্দ্র মাস হিসেবে তিন’শ চুয়ান্ন বা তিন’শ পঞ্চান্ন দিনে এক বছর হয়। প্রতিটি নেক আমলের সওয়াব আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কমপক্ষে ১০ গুণ করে দিয়ে থাকেন। (সুরা-৬ আনআম, আয়াত: ১৬০)। এই হিসাবে রমজান মাসে এক মাসের (৩০ দিনের) রোজা ১০ গুণ হয়ে তিন’শ দিনের সমান হয়। অবশিষ্ট চুয়ান্ন বা পঞ্চান্ন দিনের জন্য আরও ছয়টি পূর্ণ রোজার প্রয়োজন হয়।

রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা শাওয়াল মাসের ছয় দিনে আসমান ও জমিন সৃষ্টি করেছেন। সুতরাং যে ব্যক্তি এই মাসে ছয় দিন রোজা রাখবে, আল্লাহ তাআলা তাকে প্রত্যেক সৃষ্ট জীবের সংখ্যার সমান নেকি দেবেন, সমপরিমাণ গুনাহ মুছে দেবেন এবং পরকালে তাকে উচ্চ মর্যাদা দান করবেন।’

হযরত উবাইদুল্লাহ (রা:) থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, একদিন রাসুল সা: কে জিজ্ঞাসা করলাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ আমি কি সারা বছর রোজা রাখতে পারবো? তখন রাসুল সা: বললেন,”তোমার উপর তোমার পরিবারের হক রয়েছে”, কাজেই তুমি সারা বছর রোজা না রেখে. রমজানের রোজা রাখ এবং রমজানের পরবর্তী মাস শাওয়ালের ছয় রোজা রাখ, তাহলেই তুমি সারা বছর রোজা রাখার সওয়াব পাব (তিরমিযি)।

শাওয়াল মাসের যেকোনো সময় এই রোজা আদায় করা যায়। ধারাবাহিকভাবে বা মাঝেমধ্যে বিরতি দিয়েও আদায় করা যায়। উল্লেখ্য, রমজান মাসে ফরজ রোজা ছাড়া অন্যান্য সব রোজার নিয়ত সাহ্‌রির সময়ের মধ্যেই করতে হবে। ঘুমানোর আগে বা তারও আগে যদি এই দিনের রোজার দৃঢ় সংকল্প থাকে, তাহলে নতুন নিয়ত না হলেও চলবে এবং সাহ্‌রি না খেতে পারলেও রোজা হবে। (ফাতাওয়া শামি)।

রমজানের ছুটে যাওয়া কাজা রোজা পরবর্তী রমজান মাস আসার আগে যেকোনো সময় আদায় করা যাবে। রমজানের কাজা রোজা রাখার জন্য সময় সংকীর্ণ হলে তার আগে নফল রোজা রাখা বৈধ ও শুদ্ধ। সুতরাং ফরজ রোজা কাজা করার আগে নফল রোজা রাখতে পারবেন। তবে সম্ভব হলে আগে ফরজ রোজার কাজা আদায় করাই উত্তম। (ফাতাওয়া ইসলামিয়্যাহ, খণ্ড: ২, পৃষ্ঠা: ১৬৬)। হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, ‘আমার ওপর রমজানের যে কাজা রোজা বাকি থাকত; তা পরবর্তী শাবান ব্যতীত আমি আদায় করতে পারতাম না।’ (বুখারি: ১৯৫০; মুসলিম: ১১৪৬)।

হাদিসমতে, শাওয়াল মাসে বিয়ে-শাদি সুন্নত, যেরূপ শুক্রবারে ও জামে মসজিদে ও বড় মজলিশে আকদ অনুষ্ঠিত হওয়া সুন্নত। কারণ মা আয়েশার বিয়ে শাওয়াল মাসের শুক্রবারে মসজিদে নববিতেই হয়েছিল। (মুসলিম)। শুভ কাজের শুভসূচনার জন্য শাওয়াল মাস খুবই উপযোগী। এ মাসে বিভিন্ন ইসলামি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মবর্ষ শুরু করে থাকে। ইসলামি ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এ মাসে তাদের শিক্ষাবর্ষের নতুন ভর্তি ও নব পাঠদান শুরু করে।

শাওয়াল মাসের ছয়টি রোজা রাখা রমজানের রোজা কবুল হওয়ারও পরিচায়ক। আল্লাহ তাআলা কোনো বান্দার আমল কবুল করলে, তাকে অনুরূপ আরও আমল করার তৌফিক দান করেন। নেক আমলের প্রতিদানের একটি রূপ হলো আবার আরও নেক আমল করার সৌভাগ্য অর্জন করা। তাই নামাজ, রোজা, তিলাওয়াত ও অন্যান্য ইবাদত–বন্দেগি বাকি ১১ মাসও বজায় রাখতে হবে।

শাওয়াল ইসলামি মাসগুলোর মধ্যে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ মাস। এ মাসের বহুবিধ তাৎপর্য রয়েছে। আরবি চান্দ্রবর্ষের দশম মাস শাওয়াল। এটি হজের তিন মাসের (শাওয়াল, জিলকদ, জিলহজ) অগ্রণী। এ মাসের প্রথম তারিখে ঈদুল ফিতর বা রমজানের ঈদ। পয়লা শাওয়াল সদকাতুল ফিতর বা ফিতরা আদায় করা এবং ঈদের নামাজ পড়া ওয়াজিব। এই মাসের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে হজের, এর সঙ্গে সম্পৃক্ততা আছে ঈদের; এর সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে রোজা ও রমজানের এবং এর সঙ্গে যোগ রয়েছে সদকা ও জাকাতের। এ মাসের ৭ তারিখে তৃতীয় হিজরি সনে (২৩ মার্চ ৬২৫ খ্রিষ্টাব্দে) ওহুদ যুদ্ধে বিজয় হয়েছিল। এই মাস আমল ও ইবাদতের জন্য অত্যন্ত উর্বর ও উপযোগী।

প্রিয় পোষ্ট সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন


আপনার মতামত লিখুন :

আরও পড়ুন
কোরবানির ফজিলত
কোরবানির পশু বাছাই ও শরিকের বিধান
কুরআন-হাদিসের আলোকে হজের গুরুত্ব ও ফজিলত
হাজীগঞ্জ বড় মসজিদে ঈদের ৩ টি জামাত হবে
শাহরাস্তির ওয়ারুকে তাফসীরুল কোরআন মাহফিলে আলোচনা করলেন শায়খ আহমাদুল্লাহ
বান্দার যে কর্মের ফলে বৃষ্টি বন্ধ করে দেন আল্লাহ

ইসলাম এর আরও খবর

সম্পাদক: অধ্যাপক মুহাম্মদ শাহাদাত হোসেন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক: ইঞ্জিঃ ইমতিয়াজ সিদ্দিকী তোহা,  প্রকাশক: আবু সাঈদ ইকবাল মাসুদ সোহেল কতৃক সেন্ট পলস ক্যাথিড্রাল লন্ডন থেকে প্রকাশিত। বাংলাদেশ অফিস: (অস্থায়ী) শহীদ ভিলা, বাসা- ২৫, কাঠালবাগান, গ্রীণরোড, ঢাকা-১২০৫