Header Border

ঢাকা, বুধবার, ১১ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৭শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (শরৎকাল)
শিরোনাম :
আল্লাহর আইন কায়েম হলে সকলে সমান আলো পায়—অধ্যাপক অধ্যাপক মোঃ আবুল হোসেন এবার মোদির পদত্যাগের ‘একদফা’ দাবি প্রতীকসহ নিবন্ধন পেল নুরের গণঅধিকার পরিষদ বন্যার্তদের মাঝে ফুডপ্যাক বিতরণ ইঞ্জিঃ ইমতিয়াজ সিদ্দিকী তোহার প্রতিহিংসা পরিহার করে সুন্দর সমৃদ্ধ দেশ  গড়তে সবাই এগিয়ে আসুন: ইঞ্জিঃ মমিনুল হক শেখ হাসিনাকে ফেরত চাইতে পারে বাংলাদেশ: রয়টার্সকে উপদেষ্টা শাহরাস্তিতে বানবাসীদের মাঝে পিসবের ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ চাঁদপুরে সাবেক মন্ত্রী-এমপিসহ ৬০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা শাহরাস্তি প্রেসক্লাবের উদ্যোগে সপ্তাহব্যাপী বর্ন্যাতদের মাঝে উপহার সামগ্রী বিতরণ নেপালকে উড়িয়ে সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

জাতীয় শোক দিবস আজ

প্রিয়পোস্ট ডেস্ক

আজ ১৫ আগস্ট, জাতীয় শোক দিবস। ইতিহাসের নৃশংস ও মর্মস্পর্শী রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের দিন আজ, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদতবার্ষিকী। ১৯৭৫ সালের এই দিনে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাসভবনে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করেছিল ক্ষমতালোভী নরপিশাচ কুচক্রী মহল। এর মধ্য দিয়ে বাঙালির ইতিহাসে এক কালিমালিপ্ত অধ্যায় সংযোজিত হয়েছিল।

স্বাধীনতার মাত্র চার বছর পর জাতির পিতা যখন ক্ষত-বিক্ষত অবস্থা থেকে দেশটির পুনর্গঠন ও অর্থনৈতিক মুক্তি নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন তখনই ঘটানো হয় দেশের ইতিহাসের এ নির্মম ঘটনা।

সেদিন ঘাতকেরা শুধু বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করেনি, তাদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি শিশু থেকে অন্তঃসত্ত্বা নারী। একে একে প্রাণ হারিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুননেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শিশু শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজি জামাল। পৃথিবীর এ জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড থেকে বাঁচতে পারেননি বঙ্গবন্ধুর অনুজ শেখ নাসের, ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত, তার ছেলে আরিফ ও মেয়ে বেবি, সুকান্তবাবু, বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে যুবনেতা ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক শেখ ফজলুল হক মণি, তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনি এবং আবদুল নাঈম খান রিন্টু ও কর্নেল জামিলসহ পরিবারের ১৬ সদস্য ও ঘনিষ্ঠজন। এ সময় বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা জার্মানি থাকায় প্রাণে রক্ষা পান।

জাতির পিতাকে হত্য করার পর শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বে নেমে এসেছিল শোকের ছায়া। পশ্চিম জার্মানির নেতা নোবেল পুরস্কার বিজয়ী উইলি ব্রানডিট বলেছিলেন, বাঙালিদের আর বিশ্বাস করা যায় না। যে বাঙালি শেখ মুজিবকে হত্যা করতে পারে তারা যে কোনো জঘন্য কাজ করতে পারে।

ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত এসব খুনিকে বিচারের সম্মুখীন হওয়া থেকে রেহাই দেয়া হয়েছিল। হত্যাকাণ্ডের প্রায় চার দশক পর বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার ১২ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। ২০১০ সালে এদের মধ্যে ৫ জনের ফাঁসি ইতিমধ্যে কার্যকর করা হয়েছে। কিন্তু মৃত্যুদণ্ড রায় মাথায় নিয়ে আরও ছয় খুনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পলাতক আছেন।

শুধু দিনটিতে নয় মাসটির শুরুতেই বাঙালির হৃদয়ে শোক আর কষ্টের দীর্ঘশ্বাস শুরু হয়। পুরো জাতি গভীর শোক ও শ্রদ্ধায় শ্রেষ্ঠ সন্তানকে স্মরণ করে। প্রতি বছরের ন্যায় জাতীয় শোক দিবসকে সামনে রেখে আগস্টের প্রথম দিন থেকে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে।

দিবসটিতে ব্যক্তিগত, সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে মহান আল্লাহর দরবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ আগস্টের সব শহীদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন।

আজ দেশের সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। দিনের শুরুতেই ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করবেন। সশস্ত্র বাহিনী গার্ড অব অনার প্রদান করবে। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকার বনানী কবরস্থানে জাতির পিতার পরিবারের শাহাদতবরণকারী সদস্য ও অন্যান্য শহীদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, ফাতেহা পাঠ এবং দোয়া করবেন। এ ছাড়া গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতেও পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে ফাতেহা পাঠ, সশস্ত্র বাহিনীর গার্ড অব অনার প্রদান ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ বেতার এবং বাংলাদেশ টেলিভিশন বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করবে। এছাড়া জাতীয় দৈনিক ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, অধিদফতর ও সংস্থা জাতীয় শোক দিবসের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নিজ নিজ কর্মসূচি প্রণয়ন করেছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে জাতীয় শোক দিবস পালনে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।

এদিন সূর্য উদয় ক্ষণে বঙ্গবন্ধু ভবন এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারাদেশে সংগঠনের সব স্তরের কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে। সকাল সাড়ে ৬টায় ধানমন্ডিস্থ বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন ও সাড়ে ৭টায় বনানী কবরস্থানে ১৫ আগস্টের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদনসহ ফাতেহা পাঠ, মোনাজাত ও দোয়া মাহফিলের অয়োজন করবে আওয়ামী লীগ। ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ, সহযোগী সংগঠনসহ মহানগরের নেতাকর্মীরা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন।

বেলা ১১টায় টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাদ জোহর কেন্দ্রীয়ভাবে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সকল মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।

মন্দির, প্যাগোডা, গির্জা, উপাসনালয়ে দেশব্যাপী বিশেষ প্রার্থনা কর্মসূচির অংশ হিসেবে কেন্দ্রীয়ভাবে ১৫ আগস্টের প্রথম প্রহরে (রাত ১২টা ১ মিনিট) মিরপুর ব্যাপ্টিস্ট চার্চে (৩/৭-এ সেনপাড়া, পর্বতা, মিরপুর-১০) মোমবাতি প্রজ্জ্বলন ও বিশেষ প্রার্থনা, সকাল ৯টায় তেজগাঁও হলি রোজারি চার্চে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করেছে খ্রিস্টান স¤প্রদায়। সকাল ১০টায় রাজধানীর মেরুল বাড্ডাস্থ আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে বৌদ্ধ স¤প্রদায় এবং বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে হিন্দু সম্প্রদায় প্রার্থনা সভার আয়োজন করেছে। দুপুরে সারাদেশে অসচ্ছল, এতিম ও দুস্থ মানুষের মাঝে খাদ্য বিতরণ ও গণভোজের আয়োজন করা হবে। বাদ আসর ধানমন্ডিস্থ বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গনে মহিলা আওয়ামী লীগ দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করবে।

১৬ আগস্ট বিকেল সাড়ে ৩টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় শোক দিবসের স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন এবং বক্তব্য দেবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস যথাযথ মর্যাদা এবং ভাবগম্ভীর পরিবেশে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে পালনের জন্য আওয়ামী লীগ, সহযোগী, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং সংস্থাসমূহের সকল স্তরের নেতা-কর্মী, সমর্থক, দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

একইসাথে দলের সকল জেলা, মহানগর, উপজেলা, পৌর, ইউনিয়ন, ওয়ার্ডসহ সমস্ত শাখার নেতৃবৃন্দকে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ বিভিন্ন উপযোগী কর্মসূচি গ্রহণ করে দিবসটি স্মরণ ও পালন করার অনুরোধ জানিয়েছেন।

১৯২০ সালের ১৭ মার্চ তৎকালীন বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ছাত্রাবস্থায় থেকেই তিনি দেশের মানুষের অধিকারের জন্য রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। শুধুমাত্র বাঙালির স্বাধীনতা ও অধিকারের জন্য নিজের জীবনের ৬৬৮২ দিন কারাগারে কাটিয়েছেন। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে তিনি ছিলেন সংগ্রামী নেতা। শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির মুক্তি সনদ ৬ দফার প্রণেতা ছিলেন। সত্তরের নির্বাচনে অংশ নিয়ে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগকে এ দেশের গণমানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীকে পরিণত করেন। পাকিস্তানের সামরিকজান্তার বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক আন্দোলন গড়ে তুলে ষাটের দশক থেকে তিনি বাঙালি জাতীয়তাবাদের অগ্রনায়কে পরিণত হন। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঢাকার তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে লাখো জনতার উত্তাল সমুদ্রে বঙ্গবন্ধু বজ কণ্ঠে ঘোষণা করেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ এ ঘোষণায় উদ্দীপ্ত, উজ্জীবিত জাতি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ছিনিয়ে আনে দেশের স্বাধীনতা। বঙ্গবন্ধুর অমর কীর্তি এ স্বাধীন বাংলাদেশ।

 

প্রিয় পোষ্ট সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন


আপনার মতামত লিখুন :

আরও পড়ুন
একটিও জাল ভোট পড়লে কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হবে: ইসি হাবিব
আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যেতে বসেছে পিড়িঁতে বসে চুল কাঁটা
দিনে এক কেজি মরিচ খান নদীয়ার শেখর সিকদার
শাহরাস্তিতে পায়ুপথ থেকে বের করা হল ডাব!
অক্টোবরে চালু হচ্ছে শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল
জনগণের ওপর প্রতিশোধ নিতেই সরকার বিদ্যুৎ ও জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি করতে চাচ্ছে : রিজভী

অন্যান্য এর আরও খবর

সম্পাদক: অধ্যাপক মুহাম্মদ শাহাদাত হোসেন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক: ইঞ্জিঃ ইমতিয়াজ সিদ্দিকী তোহা,  প্রকাশক: আবু সাঈদ ইকবাল মাসুদ সোহেল কতৃক সেন্ট পলস ক্যাথিড্রাল লন্ডন থেকে প্রকাশিত। বাংলাদেশ অফিস: (অস্থায়ী) শহীদ ভিলা, বাসা- ২৫, কাঠালবাগান, গ্রীণরোড, ঢাকা-১২০৫