Header Border

ঢাকা, রবিবার, ২৮শে মে, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)

নাভিশ্বাস গরমে তাল পাখাই ভরসা

চলছে গ্রীষ্মকাল, পর্যাপ্ত পানি নেই খাল, বিল ও পুকুরে। কিছু এলাকার টিউবওয়েল গুলোই পানি উঠলেও অধিকাংশ টিউবওয়েলের পানি উঠাতে ভীষণ বেগ হতে হচ্ছে। এর মধ্যে প্রচন্ড তাপদাহ ও রূদ্ধশ্বাস গরমে জনজীবন বিপর্যস্ত। তার উপর আবার ঘন ঘন লোড শেডিং। এ যেন মড়ার উপরে খাঁড়ার ঘা। তাই গাত্র শীতল করতে অনেকটা বাধ্য হয়েই মানুষ বেছে নিয়েছে তাল পাতার পাখা। তাল গাছের পাতা দিয়ে এক বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি এই হাত পাখা গ্রামীণ জনজীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। বৈদ্যুতিক পাখার বিকল্প হিসেবে তাল পাখার জুরি নেই সুদীর্ঘ কাল থেকে। তাল গাছের কান্ডসহ পাতা কেটে রোদে শুকিয়ে বাশের শলা ও সুতার সহযোগিতায় এক বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি করা হয় এই হাত পাখা। প্রকৃতির বৈরীতায় অসহনীয় গরমে হাঁপিয়ে উঠেছে জনজীবন। তবুও থেমে নেই মানুষের দৈনন্দিন জীবনের পথচলা। তবে বিদ্যুৎ চলে গেলেই দুর্বিসহ গরমে হাঁসফাঁস করছে কর্মব্যস্ত মানুষ। 

তাইতো গা শীতল করতে কিছু সময়ের জন্য হলেও ব্যবহার করছেন সনাতন পদ্ধতিতে তৈরি  তাল গাছের পাতা দিয়ে তৈরি এই হাত পাখা। বুনাগাতী, শতখালী, শালিখাসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বাজারগুলো ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি হাত পাখা বিক্রি করা হচ্ছে ৫০-৮০ টাকা। যা কিছুদিন আগেও বিক্রি হতো ২০-৩০ টাকায়। দূরদুরান্ত এলাকা থেকে ক্রয় করে এনে বিক্রি করার কারণে ও বিভিন্ন জিনিসের বাজার মূল্যের সাথে সঙ্গতি রাখতেই তাল পাখার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। পাখা বিক্রেতা সুধীর বিশ্বাস বলেন,  আমি আজ পাঁচ বছর ধরে পাখা বিক্রি করছি। গত কয়েক বছরের চেয়ে এই বছরের শুরুতেই তুলনামূলক অনেক বেশি পাখা বিক্রি হয়েছে তাতে বেশ লাভ হয়েছে।

অপর একজন পাখা বিক্রেতা অজিৎ বিশ্বাস বলেন, অন্য ব্যবসায়ের পাশাপাশি গরমের সিজন আসলেই পাখা বিক্রি করে কিছু টাকা দেড়ি করতে পারি তবে অন্যান্য দ্রব্যের তুলনায় পাখার দাম কম থাকায় তা আর এবছর হবে না। তবে পাখা ক্রেতা বলছেন, তাপদগ্ধ জীবনে একটু প্রাণের আস্বাদন পেতে বৈদ্যুতিক পাখার বিকল্প হিসেবে তাল পাখা ব্যাবহার করেন তারা। পাশাপাশি ২০ টাকার পাখা ৮০ টাকায় বিক্রি হওয়ায় সুলভ মূল্যে পাখা ক্রয় করা অনেক কঠিন হয়ে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ তাদের। প্রতি বুধবার ও শনিবার উপজেলা সদর আড়পাড়া বাজারে চলে তালপাখা বিক্রির ধুম। সকল শ্রেণী পেশার মানুষ একটি দুটি ক্রয় করে ছুটেন গন্তব্যের দিকে। নিমিষেই ফুরিয়ে যায় শত শত তালপাখার গাইট। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রেতারা এখানে আসে তালপাখা ক্রয় করতে। আমজাদ, তুহিন, রোকেয়াসহ এমনি কয়েকজন ক্রেতার সাথে কথা বললে তারা জানান, প্রচণ্ড গরমে যখন বিদ্যুৎ চলে যায় তখন চার্জার ফ্যানের পাশাপাশি তালপাখা পরিপূরক ভুমিকা পালন করে। তাল পাখার পাশাপাশি প্লাস্টিকের তৈরি বিভিন্ন বাহারি হাত পাখা বিক্রি হচ্ছে সমানে। তবে প্লাস্টিকের হাত পাখার চেয়ে তাল পাখার কদর বেশি ক্রেতাদের কাছে। 

এই দূর্বিষহ গরমে হত-দরিদ্র ও ছিন্নমূল শিশু, রোগাক্রান্ত ব্যাক্তিদেরকে একটু স্বস্তি দিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে বিনামূল্যে বা সুলভ মূল্যে জনপ্রতি একটি করে হাতপাখা প্রদানের আহ্বান জানান শিক্ষক ও গবেষক শ্রী ইন্দ্রনীল। পাশাপাশি লোডশেডিংয়ের এই বিরুপ পরিবেশে গাত্র শীতল করতে তাল পাখার জুরি নেই বলেও জানান তিনি।

প্রিয় পোষ্ট সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন


আপনার মতামত লিখুন :

আরও পড়ুন
‘দানবাকার’ ব্যাঙ!
রাজধানীতে চলন্ত ট্রেনের নিচে পড়েও বেঁচে গেলো স্কুলছাত্র
শাহরাস্তিতে পৌর আওয়ামী লীগ, যুবলীগের বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ
একটানা ৭৪ দিন পানির নিচে!
বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ উল্ল্যাহ পাটোয়ারী ফাউন্ডেশনের সেলাই মেশিন বিতরণ 
‘প্রেমে পড়তে’ কলেজ শিক্ষার্থীরা পেলেন ছুটি

অন্যান্য এর আরও খবর

সম্পাদকঃ ইঞ্জিঃ মোঃ ইমতিয়াজ সিদ্দিকী তোহা