সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার পাঁচটি উপজেলার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। বসতভিটা ও ঘরবাড়ীতে পানি ওঠায় চরম বিপাকে পড়েছে পানিবন্দী মানুষেরা। রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় চলাচলে চরম দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। চুলা তলিয়ে যাওয়ায় রান্না করা কস্টকর হয়ে পড়েছে। টিউবওয়েল তলিয়ে যাওয়ায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। প্রাকৃতিক কাজেও নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে। সার্বক্ষনিক পানিতে থাকায় ঠান্ডা, জ্বরসহ হাত-পায়ে ঘা দেখা দিতে শুরু করেছে। কৃষিক্ষেত তলিয়ে যাওয়া কৃষকরা বিপাকে পড়েছে।
তাঁত কারখানা তলিয়ে যাওয়ায় মালিক শ্রমিকরা বেকার হয়ে পড়েছে। এতে আর্থিক সংকট শুরু হয়েছে বন্যা কবলিতদের। ঘাসক্ষেত থেকে তলিয়ে যাওয়ায় গো-খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তলিয়ে যাওয়ায় লেখাপাড়া বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়াও পানি বাড়ায় যমুনার অরক্ষিত অঞ্চল শাহজাদপুর, এনায়েতপুর ও চৌহালীতে তীব্র ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন ভাঙ্গনে বিলীন হচ্ছ বসতভিটা ও ফসলি জমি। অনেকে ভাঙ্গন আতঙ্কে বসতভিটা সরিয়ে নিচ্ছে অন্যত্র। বন্যার সংকট শুরু হলেও এখনো সরকারী-বেসরকারী সহায়তা কারো ঘরে পৌছেনি। অন্যদিকে, যমুনার নদীর পাশাপাশি আভ্যন্তরীন চলনবিল, করতোয়া, ইছামতি, বড়াল, ফুলজোড়, হুড়াসাগর নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বাবলু কুমার সুত্রধর বলেন, পাঁচটি উপজেলায় রোপা আমন, বোনা আউস, রোপা আমনের বীজতলা (স্থানীয় জাত), কলা, আখ ও সবজিসহ বিভিন্ন ধরনের ফসলের প্রায় ৯৫২ হেক্টর জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে কয়েক হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আক্তারুজ্জামান জানান, আমাদের তথ্যমতে ৫টি উপজেলার ২২টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ২ হাজার ৭শত ৬৭ পরিবারের প্রায় ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দী রয়েছে। এসব পানিবন্দিদের জন্য ইতোমধ্যে সদর, কাজিপুর ও চৌহালী ও শাহজাদপুর উপজেলায় ৪০ মেট্টিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহববুুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘন্টায় যমুনার পানি ৪ সে.মি বৃদ্ধি পেয়ে রবিবার সকালে সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ হার্ড পয়েন্টে বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বাড়ায় ভাঙ্গনেও বেড়েছে। তবে জিওব্যাগ ফেলে নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রবলস্রোতের কারনে রোধ করা কস্টকর হচ্ছে।