দরজায় কড়া নাড়ছে পবিত্র ঈদুল আজহা। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে কর্মস্থল ছাড়ছেন অনেকেই। আর তাতেই ফাঁকা হতে শুরু করেছে বন্দর নগরী চট্টগ্রাম। এতে সড়কে কমেছে যানবাহন। যাত্রীর চাপ থাকায় এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বাড়তি ভাড়া আদায় করার অভিযোগ উঠেছে বাস কাউন্টারগুলোর বিরুদ্ধে।
চাকরির সুবাধে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে নগরীতেই থাকেন জাকের আহমেদ। তারা স্বামী-স্ত্রী দুজনই চাকরি করেন। কিন্তু গ্রামের বাড়িতে মা-বাবা থাকায় ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে পরিবার নিয়ে গ্রামে যান তিনি।
বাড়ি ফেরার বিষয়ে জানতে চাইলে জাকের আহমেদ বলেন, ‘বাবা-মা গ্রামের বাড়িতে থাকেন। তাই প্রতিটি ঈদ মা-বাবার সঙ্গে গ্রামের বাড়িতে করার চেষ্টা থাকে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ছুটি শুরু হওয়ায় স্ত্রী, ছেলে-মেয়েকে নিয়ে শুক্রবার রাতে বাড়িতে এসেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘যাওয়ার পথে বড় ধরনের কোনো ঝামেলায় পড়তে হয়নি। তবে কিছু কিছু জায়গায় সড়কের পাশে গরুর হাট বসায় যানজটে পড়তে হয়েছে।’
শুধু জাকের আহমেদ নন, শুক্রবার থেকে ঈদের ছুটি শুরু হওয়ায় নাড়ির টানে এখন নগর ছেড়ে গ্রামে যাচ্ছেন তার মতো হাজার হাজার নগরবাসী। আর তাতে ফাঁকা হতে শুরু করেছে বন্দর নগরী। এতে সড়কে কমেছে যানবাহন।
নগরীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা যায়, সড়কে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অর্ধেকে নেমে এসেছে যানবাহন। তবে ভিড় বেড়েছে বাসস্টেশন, রেলস্টেশনে।
গতকাল শনিবার (১৫ জুন) নগরীর বিভিন্ন বাসস্টেশন, রেলস্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, সবখানে বাড়ি ফেরা মানুষের উপচে পড়া ভিড়। প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ করতে সবাই ছুটছে বাড়ির পানে। যাত্রীর চাপ থাকায় এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বাড়তি ভাড়া আদায় করার অভিযোগ উঠেছে বাস কাউন্টারগুলোর বিরুদ্ধে।
যাত্রীদের অভিযোগ, স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে এখন টিকিট প্রতি ৫০ থকে ১০০ টাকা বেশি। ক্ষেত্র বিশেষ তার চেয়েও বেশি ভাড়া আদায় করছেন বাস কাউন্টারগুলো।
গ্রামের বাড়ি যাওয়ার জন্য অলংকার মোড়ে অবস্থান করছেন ইস্রাফিল। তিনি বলেন, ‘আগে চট্টগ্রাম থেকে চাঁদপুর ভাড়া ছিল ৪৫০ টাকা। এখন আমাদের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে ৫৫০ টাকা করে। যাত্রীর চাপ থাকায় এখন গাড়ির কিছুটা সংকট। তাই এখন বাড়তি ভাড়া দিয়েই আমাদের যেতে হচ্ছে।’
তবে বাড়তি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বাস কাউন্টারগুলো। তারা বলছেন, বিআরটিএ’র নির্ধারিত ভাড়াই তারা আদায় করছেন। কাউন্টারে বিআরটিএ’র ভাড়ার তালিকা টানানো আছে। ওই তালিকা অনুযায়ী ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।
এ সম্পর্কে জানতে চাইলে সৌদিয়া কাউন্টারের টিকিট ম্যানেজার মো. ইসহাক বলেন, ‘ঈদের সময় শহর থেকে যাত্রীর চাপ থাকলেও ফিরতি ট্রিপে যাত্রী পাওয়া যায় না। তাই ঈদের জন্য মালিকপক্ষ থেকে ভাড়ার একটি তালিকা তৈরি করে দেওয়া হয়। ওই তালিকা অনুযায়ীই ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। ভাড়া আগের চেয়ে কিছুটা বেশি নেওয়া হচ্ছে। তবে পরিমাণটা অনেক সামান্য।’