Header Border

ঢাকা, রবিবার, ৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (শরৎকাল)
শিরোনাম :
আল্লাহর আইন কায়েম হলে সকলে সমান আলো পায়—অধ্যাপক অধ্যাপক মোঃ আবুল হোসেন এবার মোদির পদত্যাগের ‘একদফা’ দাবি প্রতীকসহ নিবন্ধন পেল নুরের গণঅধিকার পরিষদ বন্যার্তদের মাঝে ফুডপ্যাক বিতরণ ইঞ্জিঃ ইমতিয়াজ সিদ্দিকী তোহার প্রতিহিংসা পরিহার করে সুন্দর সমৃদ্ধ দেশ  গড়তে সবাই এগিয়ে আসুন: ইঞ্জিঃ মমিনুল হক শেখ হাসিনাকে ফেরত চাইতে পারে বাংলাদেশ: রয়টার্সকে উপদেষ্টা শাহরাস্তিতে বানবাসীদের মাঝে পিসবের ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ চাঁদপুরে সাবেক মন্ত্রী-এমপিসহ ৬০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা শাহরাস্তি প্রেসক্লাবের উদ্যোগে সপ্তাহব্যাপী বর্ন্যাতদের মাঝে উপহার সামগ্রী বিতরণ নেপালকে উড়িয়ে সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি: ২৫ বছরে সুন্দরবনের আয়তন কমেছে ১১ হাজার হেক্টর

সুন্দরবন বিশ্বের বৃহত্তম শ্বাসমূলীয় বন। বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলসহ বিশ্বের অনেক দেশের সমুদ্র উপকূলে এমন অনেক শ্বাসমূলীয় বা ম্যানগ্রোভ বন ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকলেও সুন্দরবন তাদের বৃহত্তম। তাছাড়া একই সঙ্গে বন, জলাভূমি, সামুদ্রিক ও উপকূলীয় বাস্তুতন্ত্রের সমন্বয়ে গঠিত এমন প্রাকৃতিক বন পৃথিবীতে আর দেখা যায় না। ছোট-বড় নানা প্রজাতির গাছ আর ছোট ছোট খাল ও নদীর ধারায় ভরপুর এই বন ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগার’ বা ডোরাকাটা বাঘের অন্যতম আবাসস্থলও। 

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিকটি হলো, এই বন জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশের অন্যতম প্রাকৃতিক ঢাল। বিশেষজ্ঞদের মতে, গত ৩০ বছরে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বঙ্গোপসাগর উপকূলে যতবার আঘাত হেনেছে, তাতে সুন্দরবন যদি ঢাল হয়ে না দাঁড়াত তাহলে গোটা বাংলাদেশই অস্তিত্ব সংকটে পড়ত। শুধু প্রাকৃতিক সম্পদেরই নয়, বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতিও এই দেশকে সামাল দিতে হতো। 

এদিকে জলবায়ুর পরিবর্তন এখন বড় এক বৈশ্বিক সংকট হয়ে উঠেছে। এই পরিবর্তনজনিত ঝুঁকির কারণে ভবিষ্যতে আরও অনেক প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হবে বাংলাদেশকে। তাই এই ক্ষতি থেকে সুন্দরবনকে রক্ষার লক্ষ্যে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিতে হবে। না হলে ২০০-এর বেশি বাঘের অন্যতম আবাসস্থল ম্যানগ্রোভ সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য টিকে থাকা কঠিন হবে।

রেমালের তাণ্ডব সামলেছে সুন্দরবন

পরিবেশবিদরা বলছেন, সম্প্রতি আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবও সামাল দিয়েছে সুন্দরবন। আবহাওয়াবিদদের আশঙ্কা ছিল, উপকূল ও বনাঞ্চলে আগের বিভিন্ন ঘূর্ণিঝড়ের চেয়ে অনেক বেশি বিপর্যয় ডেকে আনবে রেমাল। কার্যত তা-ই হয়েছে। রেমালের আঘাতে আগের ঘূর্ণিঝড় বুলবুল ও আম্ফানের চেয়ে তিনগুণ বেশি গাছপালা, পশুপাখি, প্রাণী ও অবকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে। এই ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে অন্তত ৪০ বছর লাগবে বলে জানিয়েছেন বন কর্মকর্তা ও জলবায়ুবিদরা। তারা জানাচ্ছেন, সুন্দরবন না থাকলে লোকালয়ের আরও বেশি ক্ষয়ক্ষতি হতো।  

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাব বেশি পড়েছে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্যের ওপর। এতে ১১ কিলোমিটার এলাকার গোলপাতার বন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জোয়ার-ভাটার চক্রে পুরো সুন্দরবন ৪৮ ঘণ্টায় ৩ থেকে ৯ ফুট পানির নিচে ছিল। ফলে পশুপাখির বাসা, ডিম ও বাচ্চা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বনের ভেতরে জীববৈচিত্র্য যেমনÑ হরিণ, শূকর, গুইসাপ, সাপ ও বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীর মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। বনের পুকুরগুলো লবণাক্ত পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সুপেয় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। এতে ভবিষ্যতে এই বনের সামগ্রিক জীববৈচিত্র্য আরও সংকটাপন্ন হবে। বনের ভেতর মিষ্টিপানির জলাশয়গুলোতে লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়াতে বাঘসহ বন্য প্রাণীরা নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে অকালে মারা যেতে পারে। বনে ফলদ বৃক্ষও কমে যেতে পারে। এর ফলে নানা প্রজাতির পাখি, প্রাণী ও বানরের খাদ্য সংকট তৈরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

২৫ বছরে আয়তন কমেছে ১০,৯৮০ হেক্টর

গবেষণায় বলা হচ্ছে, বাংলাদেশে গত ২৫ বছরে সুন্দরবনের আয়তন কমেছে ১০,৯৮০ হেক্টর। ভাঙনের কারণে প্রতি বছর ৬ কিলোমিটার বনের আয়তন কমছে। গত ৩৭ বছরে ১৪৪ কিলোমিটার আয়তন কমেছে। ২০০৭ সালের সিডরে সুন্দরবনের প্রায় ৪০ শতাংশ ক্ষতি হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৯৫৯ সালে সুন্দরবনে প্রতি হেক্টরে সুন্দরী গাছের সংখ্যা ছিল ২১১টি। ২০২০ সালে এই সংখ্যা এসে দাঁড়ায় ৮০টিতে। এছাড়া বনের বিভিন্ন প্রাণীও অস্তিত্ব সংকটে রয়েছে।

প্রকৃতি সংরক্ষণ বিষয়ক সংস্থাগুলোর আন্তর্জাতিক জোট আইইউসিএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মানবসৃষ্ট কারণ, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ও চরম আবহাওয়া পরিস্থিতির কারণে পৃথিবীর অর্ধেকের বেশি ম্যানগ্রোভ বন ধ্বংস হওয়ার ঝুঁকিতে। বাংলাদেশের নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, পিরোজপুর, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলায় যেসব ম্যানগ্রোভ বন রয়েছে; সেগুলোও ঝুঁকিতে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন। সংস্থাটি বলছে, মানুষের অবিবেচনাপ্রসূত নানা কর্মকাণ্ডের কারণে সুন্দরবনের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হচ্ছে। অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন, শিল্পের দূষণ, জলযান থেকে তেল ছড়িয়ে পড়া, আগ্রাসী প্রজাতির বিস্তার, সম্পদ আহরণে বিজ্ঞানকে সঠিকভাবে কাজে না লাগানো, চোরা শিকার, উজানে পানির প্রবাহ হ্রাস পাওয়া, লবণাক্ততা বৃদ্ধি পাওয়া, রোগের আক্রমণ, আগুন লাগা, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাওয়া, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ইত্যাদি কারণে এ বন ধ্বংসের পথে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০০৭ সালে সিডরের পর সুন্দরবনে ৪০টি হরিণ, একটি বাঘ ও একটি তিমির মৃতদেহ পাওয়া যায়। ২০০৯-এ ঘূর্ণিঝড় আইলার পর তিনটি হরিণ ও একটি শূকরের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। ২০১৩ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত হওয়া ঝড়গুলোতে বাঘ, হরিণসহ অন্য কোনো বন্য প্রাণীর ক্ষতি হয়নি। তবে ২০২১ সালের ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে চারটি হরিণের মৃতদেহ পাওয়া যায়। আর ঘূর্ণিঝড় রেমালে ১২৭টি মৃত হরিণ ও চারটি মৃত বন্য শূকরের মরদেহ উদ্ধার করে বন বিভাগ। এছাড়া ১৮টি জীবিত হরিণ ও একটি অজগরকে উদ্ধার করে বনে ছেড়ে দেওয়া হয়।

ঝড়ের সময় সুন্দরবনে ৪৮ ঘণ্টা ভাটা ছিল না

সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন জানান, রেমালে পশ্চিম সুন্দরবনের আওতায় খুলনা ও সাতক্ষীরায় অবকাঠামোগত ক্ষতির পরিমাণ ২ কোটি ৬১ লাখ টাকা। এর মধ্যে পন্টুন গ্যাংওয়ে একটি, জেটি ১৮টি, মিষ্টিপানির পুকুর ১৪টি লবণাক্ততায় পরিণত হয়। বন বিভাগের ৯টি অফিসের ২ হাজার ৬৩০ ফুট রাস্তা, বনকর্মীদের তিনটি ব্যারাক, আটটি সোলার প্লেট, দুটি ওয়্যারলেস টাওয়ার, দুটি জেনারেটর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তিনি বলেন, ‘সুন্দরবনজুড়ে পাখির হাজার হাজার বাসা ছিল। অনেক বাসায় ডিম ও বাচ্চা ছিল। সেই ক্ষতি পরিসংখ্যান দিয়ে নিরূপণ করা কঠিন। হরিণগুলোর মৃতদেহ গণনা করা গেলেও ভেসে যাওয়ার হিসাব মিলবে না। ঝড়ের সময় সুন্দরবনে ৪৮ ঘণ্টা ভাটা দেখা যায়নি। ৯ ফুট পানির নিচে ছিল বন। অথচ তিন ফুটের নিচের প্রাণীগুলো এত পানিতে টিকতে পারে না। তাদের ক্ষয়ক্ষতি তো নিরূপণ করা সম্ভবই নয়। বনের জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি অর্থ দিয়ে ফিরিয়ে আনা অসম্ভব। তবে এই ক্ষতি সুন্দরবন নিজেই কাটিয়ে উঠবে, উঠতে পারবে। এই ক্ষতি প্রাকৃতিকভাবে ঠিক হতে অন্তত ৪০ বছর লাগতে পারে।’ 

সবচেয়ে বেশি হুমকিতে পড়েছে বাঘ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ প্রফেসর এমএ আজিজ প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘সারা বিশ্বে বাঘের আবাস হিসেবে সুন্দরবন বিশেষভাবে গুরুত্ব। ভারত ও বাংলাদেশের সুন্দরবন মিলিয়ে যত বাঘ আছেÑ তা বিশ্বে বাঘের অন্যতম সোর্স সাইটও। পৃথিবীতে বাঘ সংরক্ষণে এটি প্রায়োরিটি ল্যান্ডস্কেপ হিসেবেও স্বীকৃত। দুশোর বেশি বন্য বাঘের ব্রিডিং সাইট হওয়াতে গ্লোবাল টাইগার কনজারভেশনে এটির গুরুত্বও অন্যতম। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এখন সবচেয়ে বেশি হুমকিতে বাঘের এই আবাসস্থল। সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় রেমালে যত সংখ্যক হরিণ মারা গেছে, তত আর এর আগে মারা যায়নি। সুন্দরবনকে রক্ষায় এখন তাই দেশের উচ্চপর্যায় এবং আন্তর্জাতিক মাধ্যম থেকেও উদ্যোগ নিতে হবে। ঘূর্ণিঝড় রেমালে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা আমরা এখনও সম্পূর্ণরূপে জানি না। যদি তাৎক্ষণিক একটা অ্যাসেসমেন্ট করা যেত, তাহলে জানা যেত ক্ষতির পরিমাণ। এটি ঝড় যাওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে এটি করা যেত। কিন্তু তা করা হয়নি। তাই এই মুহূর্তে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্যের একটি অ্যাসেসমেন্ট খুবই জরুরি।

তিনি বলেন, সুন্দরবনের দক্ষিণ উপকূলে প্রচণ্ডভাবে ভাঙন হচ্ছে। পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বে কিছু ভূমি গঠন হয়ে নতুন বন তৈরি হচ্ছে। কিন্তু পশ্চিমে বড় বড় নদীগুলোতে ভাঙন বেড়েছে। যে হারে নদী ভাঙছে তা থেকে উত্তরণের উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। প্রয়োজনে বোল্ডার ফেলে ভাঙন রোধ করা যায় কি না বা বিশ্বের অন্য কোনো ম্যানগ্রোভ বা জলার বনের ভাঙন রোধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়ে থাকলে তা সুন্দরবনেও প্রয়োগযোগ্য কি না, তা নিয়ে ভাবা উচিত। বনে যেসব বাঁধ আছে, তা নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণও জরুরি। পাশাপাশি নদীর পাড়গুলো উঁচু করা প্রয়োজন। এছাড়া বনের ভেতর মাটি দিয়ে উঁচু জায়গা তৈরি করে দেওয়া যেতে পারে। যাতে দুর্যোগের সময় বন্য প্রাণীরা সেসব জায়গায় আশ্রয় নিতে পারে।

সরেজমিন যা দেখা গেল

সম্প্রতি সুন্দরবন ঘুরে দেখা যায়, উপড়ে পড়ে আছে নানা প্রজাতির উদ্ভিদ ও গাছপালা। বাংলার বাঘের অন্যতম অভয়ারণ্য কটকা ও শরণখোলার চিত্র আরও ভয়াবহ। বেশকিছু গাছের মূল টিকে থাকলেও নেই পাতা ও জীবন। কিছু আবার মৃতপ্রায়। তীর রক্ষায় আছে বালুর বস্তার দিয়ে নির্মিত বাঁধ। কিন্তু সেগুলোর অবস্থাও শোচনীয়। বনটির বেশিরভাগ এলাকায় উপড়ে পড়ে আছে গাছপালা। হাতেগোনা কিছু হরিণ, শূকর এদিক-ওদিকে ঘুরে খাবার খাচ্ছে। বাঘের অন্যতম বিচরণক্ষেত্র টাইগার পয়েন্ট ও টাইগার টিলার আশপাশের এলাকা, জামতলা বিচ ও কচিখালীতেও দেখা গেছে দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতির নানা চিহ্ন।

আলি নামের একজন ট্যুর গাইড বললেন, ‘কটকার টাইগার হিলের আশপাশে আগে জোয়ারের পানি আসত না। কিন্তু এখন সমুদ্রের পানি বনের অনেক ভেতর পর্যন্ত বিস্তৃত হচ্ছে। বিশেষ করে পূর্ণিমার সময় ফুলেফেঁপে ওঠা পানির উচ্চতা বেশি থাকে। এতে সাগরের পানির সঙ্গে বালি এসে জমছে বনের ভেতর। ফলে সুন্দরী, গেওয়াসহ অনেক প্রজাতির গাছ ও উদ্ভিদ শুকিয়ে মারা যাচ্ছে।’

বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন বলেন, ‘‌‌‌‌জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগুলো এখন আমাদের কাছে দৃশ্যমান। বর্তমানে যেকোনো বড় জোয়ারের সময় পুরো ফরেস্ট ফ্লোর (বনভূমি) ডুবে যাচ্ছে। অথচ আজ থেকে সাত বছর আগে জোয়ারের সময় বনের ১০০-২০০ মিটার ডুবত। এছাড়া সুন্দরী গাছও উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাচ্ছে। কারণ সুন্দরী গাছ লবণাক্ত পানি সহ্য করতে পারে না।’ 

বুয়েটের প্রতিবেদনে যা বলা হয়েছে

সম্প্রতি বুয়েটের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, আগামীতে বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের তীব্রতা বাড়বে বাংলাদেশ অংশের সুন্দরবনে। এর মধ্যে ঘূর্ণিঝড়, পানির উচ্চতা ও লবণাক্ততা বৃদ্ধি অন্যতম। গবেষকরা বলছেন, এখন প্রতিবছর বড় ধরনের ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে জলোচ্ছ্বাসও হচ্ছে। এর স্রোতও বেশি। ফলে উপকূলীয় ভূমিক্ষয় ও মাটি ধুয়ে যাচ্ছে। এ কারণে মারা যাচ্ছে গাছ।

বুয়েটের জলবায়ুবিদ, পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. একেএম সাইফুল ইসলাম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহ শিকার বাংলাদেশ। সুন্দরবনে একের পর এক ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানছে। ভবিষ্যতে বনে লবণাক্ততা আরও বাড়বে। সমুদ্রের উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় জোয়ারের পানি বনে ঢুকছে। এতে মাটি সরে যাওয়াতে ঝড়ে যেসব গাছের ক্ষতি হচ্ছে, সেগুলো পুনরুজ্জীবিত হতে পারছে না। আগেও সুন্দরবনে ঝড় হলে গাছ মারা যেত। কিন্তু এখন গাছ মারা যাওয়ার ঘটনা বেড়েছে। অথচ দৃশ্যমান কোনো সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনা নেই। বাঁধ দিয়েও সুরক্ষিত করা হয়নি ম্যানগ্রোভ বনটিকে।’

প্রিয় পোষ্ট সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন


আপনার মতামত লিখুন :

আরও পড়ুন
শেখ হাসিনাকে ফেরত চাইতে পারে বাংলাদেশ: রয়টার্সকে উপদেষ্টা
চাঁদপুরে সাবেক মন্ত্রী-এমপিসহ ৬০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা
বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩১, ক্ষতিগ্রস্ত ৫৮ লাখ মানুষ
জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার
ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে ট্রেন চলা শুরু রাতে
ফিরে এলো ঈদুল আজহা

জাতীয় এর আরও খবর

সম্পাদক: অধ্যাপক মুহাম্মদ শাহাদাত হোসেন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক: ইঞ্জিঃ ইমতিয়াজ সিদ্দিকী তোহা,  প্রকাশক: আবু সাঈদ ইকবাল মাসুদ সোহেল কতৃক সেন্ট পলস ক্যাথিড্রাল লন্ডন থেকে প্রকাশিত। বাংলাদেশ অফিস: (অস্থায়ী) শহীদ ভিলা, বাসা- ২৫, কাঠালবাগান, গ্রীণরোড, ঢাকা-১২০৫