নরসিংদীর রায়পুরায় ছেলের দায়ের কোপে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পর ছেলে নিজেই ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে পুলিশে খবর দেয়। পরে ঘটনাস্থল থেকে তাকে আটক করে পুলিশ। রবিবার (৭ মে) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রায়পুরা উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের মেজেরকান্দী উত্তরপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
রায়পুরা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নবী হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
নিহত ৭০ বছর বয়সী আইনুল হকের বাড়ি রায়পুরা উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের মেজেরকান্দী উত্তরপাড়া গ্রামে। আটক ইয়াসিন নিহতের দ্বিতীয় ছেলে।
পরিবারের দাবি, ইয়াসিন মাদকে আসক্ত।
ইয়াসিনের স্ত্রী হাওয়া বেগম বলেন, ‘আমার বিয়ে হয়েছে চার বছর। আমার শ্বশুর ও সৎ শাশুড়ির অত্যাচারে আমি বেশিরভাগ সময় বাপের বাড়িতে কাটিয়েছি। আমাদের বিষয় নিয়ে প্রায়ই আমার শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে ঝগড়া হতো। আজও আমার স্বামীর সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ইয়াসিন দা দিয়ে তার বাবার মাথায় ও শরীরে কোপ দেয়। এতে আমার শ্বশুর মারা যান।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি বিয়ের পর দেখতাম তিনি (ইয়াসিন) মাদক সেবন করতেন।’
মির্জানগর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. মোমেন মিয়া বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে শুনেছি, বাবাকে খুন করে ইয়াসিন নিজেই ৯৯৯-এ কল করে পুলিশে খবর দিয়েছে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকেই ইয়াসিনকে আটক করে।’
নিহত আইনুল হাজী কল্যাণ সংস্থা মির্জানগর ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির সভাপতি হাজী আলম ভূইয়া। তিনি বলেন, ‘আমরা ২০১৪ সালে একসঙ্গে হজ করেছি। তারপর থেকে তার সঙ্গে আমার একটা সুসম্পর্ক। তিনি প্রায়ই এ নেশাগ্রস্ত ছেলেকে নিয়ে কথা বলতেন। তিনি তার ছেলেকে খুব ভয়ও পেতেন। তার জন্য নরসিংদীতে একটি বাড়িও বিক্রি করতে হয়েছে বলে বলেছিলেন তিনি।’
রায়পুরা থানার উপপরিদর্শক নবী হোসেন বলেন, ‘দা দিয়ে কুপিয়ে বাবাকে হত্যার পর ইয়াসিন নিজেই ৯৯৯-এ কল করে বিষয়টি জানান। পরে আমরা তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যাই। প্রাথমিক জিজ্ঞেসাবাদের জন্য ইয়াসিনের স্ত্রী ও মাকে থানায় নেওয়া হয়েছে।’
নিহতের মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘হত্যায় ব্যবহৃত দা উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ নরসিংদী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সূত্র: প্রতিদিনের বাংলাদেশ