ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রথমে ব্যাটিং করা বাংলাদেশ যুবাদের পুঁজিটা ছিল সাদামাটা— ১৯৮ রান। তবে প্রবল আত্মবিশ্বাস আর পেসারদের তাণ্ডবে সমতল রাস্তায় হোঁচট খায় ভারত। লক্ষ্য তাড়ায় ১৩৯ রানেই থামে প্রতিবেশী দেশের রান চাকা। ফলে ৫৯ রানে জয় তুলে টানা দ্বিতীয়বার এশীয় শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট মাথায় তুলল বাংলাদেশ। যুব এশিয়া কাপে নয়বার ফাইনাল খেলে এবারই প্রথম চ্যাম্পিয়নের ট্রফি হাতে নিতে পারল না ভারতীয়রা।
রবিবার দুবাইয়ে ভারতের অধিনায়ক মোহাম্মদ আমানের আমন্ত্রণে ব্যাটিংয়ে নেমে আগের ঘটনা পুনরাবৃত্তি করে বাংলাদেশ। ভারতীয় বোলারদের বিপক্ষে দুইশ রানের আগেই গুটিয়ে যায় টাইগার যুবারা। কাঙ্ক্ষিত রান সংগ্রহ করতে না পারলেও বোলিংয়ে বেশ দাপট দেখায়। সহজ লক্ষ্য একটা পর্যায়ে কঠিন করে তোলে ভারত। বিশেষ করে বাংলাদেশের পেসারদের সামনে দাঁড়াতেই পারেননি আমান-হার্দিকরা। আসরজুড়ে দুর্দান্ত বোলিং উপহার দিয়ে ম্যাচসেরা ও সিরিজ সেরার পুরস্কার জিতেছেন ইমন (১৩ উইকেট)।
গতকাল প্রথম ওভারে যুধাজিৎ গুহর বলে ছক্কা মেরে রানের খাতা খোলেন বাংলাদেশের ওপেনার জাওয়াদ আবরার। অন্য প্রান্তে কালাম সিদ্দিকী অবশ্য রান বের করতে পারছিলেন না। উল্টো দলীয় ১৭ রানে উইকেট বিলিয়ে দেন। জাওয়াদ ৩৫ বলে ২০ রান করে সাজঘরে ফেরেন। আসরজুড়ে ব্যাটিং বীরত্ব দেখানো তামিমের জন্য দিনটি ভালো ছিল না। ২৮ বলে ১৬ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি।
৬৬ রানে ৩ উইকেট হারালে চতুর্থ উইকেটে জুটি গড়ে দলকে ভালো পর্যায়ে নিয়ে যান শিহাব জেমস ও রিজান হোসেন। ৬২ রানের জুটি গড়েন তারা। জেমস ৬৭ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ৪০ রানে ফিরতেই ঘটে ছন্দপতন। এরপর দেশকে এগিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব নেন ফরিদ হাসান। ৪৯তম ওভারে তিনি এলবিডব্লিউ হলে ২০০ রানের ঘর পেরোনোর আশা ম্লান হয় বাংলাদেশের। ৪৯ বলে ৩৯ রান করেন ফরিদ। শেষ পর্যন্ত ১৯৮ রানে থামে দলীয় ইনিংস। রতের হয়ে হার্দিক, চেতন শর্মা ও যুধাজিত গুহা ২টি করে উইকেট নেন।
লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই চাপে পড়ে ভারত। দ্বিতীয় ওভারেই আইয়ুশ মাত্রেকে সাজঘরে ফেরান আল ফাহাদ। ৪.৪ ওভারে দ্বিতীয় আঘাত হানেন মারুফ মৃধা। তাতে ঠিকমতো দাঁড়ানোর সুযোগই পায়নি ভারত। মাঝের দিকে আন্দ্রে সিদ্ধার্থ (২০), কার্থিকেয়ার (২১) পর প্রান্ত আগলে লড়াইয়ের চেষ্টা করতে থাকেন আমান। ৯২ রানে সপ্তম উইকেট পড়লে বাংলাদেশের জয়ের পথে কাঁটা হয়েছিলেন তিনি। দলের ১১৫ রানে আমানকে (২৬) বোল্ড করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক আজিজুল হাকিম। জয়ের আনুষ্ঠানিকতা সারতে তখন প্রয়োজন আর দুই উইকেটের। দ্রুত সময়ে নবম উইকেটও তুলে নেন হাকিম। বোল্ড করেন হার্দিক রাজকে (২৪)। তারপর ৩৫.২ ওভারে চেতন শর্মাকে ফিরিয়ে জয়ের আনুষ্ঠানিকতা সারেন তিনি। ভারত অলআউট হয়েছে ১৩৯ রানে। ২.২ ওভারে ১ মেডেন ও ৮ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন আজিজুল। ২৪ রানে সমসংখ্যক উইকেট নেন ইকবাল হোসেনও। ৩৪ রানে দুটি নিয়েছেন আল ফাহাদ। একটি করে নিয়েছেন মারুফ মৃধা ও রিজান হোসেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ১৯৮ (মোহাম্মদ শিহাব ৪০, রিজান ৪৭, ফরিদ ৩৯; যুধাজিত গুহা ২/২৯,চেতন ২/৪৮)
ভারত: ১৩৯ (আমান ২৬, হার্দিক ২৪, কার্থিকেয়া ২১; আজিজ ৩/৮, ইমন ৩/২৪)
ফলাফল: বাংলাদেশ ৫৯ রানে জয়ী
ম্যাচ ও টূর্ণামেন্ট সেরা: ইকবাল হোসেন