ক্রীড়া প্রতিবেদক
কুড়ি কুড়ির সংস্করণে এক বছরে সর্বাধিক ছক্কার রেকর্ড ভেঙেছেন নিকোলাস পুরান। নতুন রেকর্ডটা গড়েছেন তিনি এ বছরই। সব মিলিয়ে বিদায়ি বছরটিতে ১৭০টি ছক্কা উপহার দিয়েছেন। ক্যারিবীয় কিংবদন্তি ক্রিস গেইল থেকে যা ৩৫টি বেশি। সেই হার্ডহিটার পুরানের ব্যাট বাংলাদেশ সিরিজে ছিল একরকম নিষ্ক্রিয়। বিধ্বংসী ব্যাটার পুরান ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে। কেননা তাকে দমিয়ে রাখার জন্য দারুণ এক অস্ত্র প্রয়োগ করেছিল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা! বাংলাদেশের সেই অস্ত্র আর কেউ নন- শেখ মেহেদী হাসান। বলতে গেলে পুরো সিরিজে পুরানকে একবারও মাথা তুলতে দেননি তারকা এ অফ-স্পিনার। ভয়ানক এ ক্যারিবীয় ব্যাটিং দৈত্যকে তিন ম্যাচেই কুপোকাত করে ছেড়েছেন তিনি একাই।
প্রথম দুই ম্যাচে ছক্কা তো দূরে থাক, পুরান আউট হন ১ ও ৫ রান নিয়ে। শেষ ম্যাচে পুরান ফেরেন ১৫ রান নিয়ে। এত অল্প রানে তাকে আউট করার কৃতিত্ব দেখিয়েছেন মেহেদী। এমনটা কীভাবে সম্ভব হলো ম্যাচ শেষে মেহেদী জানান, একসঙ্গে বিপিএলে খেলায় পুরান সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা তৈরি হয়েছিল। এই সিরিজে তার দুর্বল জায়গায় আঘাত করেই সফল হয়েছেন।
সিরিজে মেহেদী নিষ্ক্রিয় করে রাখেন অন্য সব ক্যারিবীয় ব্যাটারকেই। পাওয়ার প্লেতে বোলিং করার মতো কঠিন কাজটি করে গেছেন অনায়াসে। কিন্তু ক্যারিবীয় ব্যাটারদের তিনি চেনা রূপে আবির্ভূত হতে দেননি। তিন ম্যাচ খেলে শিকার করেন আট উইকেট। এজন্য ওভারপ্রতি তার খরচ মাত্র ৫.৭৫ রান। দুর্দান্ত এ বোলিং পারফরম্যান্সে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো সিরিজসেরা হয়েছেন। এ সাফল্য ধরা দিয়েছে উইকেট বুঝে বল ফেলতে পারায়, ‘এই ধরনের উইকেটে বোলিং উপভোগ করি আমি। বিশ্বকাপেও দেখেছিলাম এখানে চটচটে ও নিচু বাউন্সের উইকেট। সিরিজের আগেই আমাদের পরিকল্পনা ছিল উইকেটে সোজা বল করা। এই ধরনের উইকেটে সঠিক নিশানায় বল করাই গুরুত্বপূর্ণ। বিপিএলে ও অন্যান্য দলে একসঙ্গে খেলায় পুরানকে খুব ভালো করেই জানি আমি। অফ-স্পিনারদের বিপক্ষে পুরানের কাজ কঠিন হয়ে ওঠে, এটা জানি আমি। এটাই ছিল পরিকল্পনা এবং ভালোভাবে প্রয়োগ করে আমরা সফল হতে পেরেছি।’
গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সেন্ট ভিনসেন্টে দেশের হয়ে খেলার সুযোগ পাননি। তিন ম্যাচেই ছিলেন দর্শক হয়ে। সেই বাস্তবতা মেনে নিয়েছেন। তখন বাইরে থেকে যা দেখেছেন, এবার রংপুর রাইডার্সের জার্সি গায়ে গায়ানায় গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি খেলে যে অভিজ্ঞতা জমিয়েছেন, তা কাজে লাগিয়েছেন এই সিরিজে, ‘বিশ্বকাপে আমাদের অনেক বিকল্প ছিল এবং দলীয় ভারসাম্যের ব্যাপার ছিল। এজন্য খেলতে পারিনি। তবে আবার ওয়েস্ট ইন্ডিজে এসেছি আমরা, গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি খেলে এই সিরিজের জন্য অনেক অভিজ্ঞতা পেয়েছি।’