ফরিদগঞ্জে দেড় যুগেও আলোর মুখ দেখেনি সেকদি-চান্দ্রার সড়কটি এবং পুরনো খুপরি ঘরেই চলছে বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম। বাজারের ভিতরে ইউনিয়ন পরিষদ ভবনটি থাকার কারণে নানান সমস্যায় ভুগছেন কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সাধারণ জনগণ। এছাড়া ভবনের প্রবেশ পথটি খুবই সরু। পাশে ছাগলের হাট। পরিবেশ যাচ্ছে-তাই। অথচ ইউনিয়নটি বেশ সমৃদ্ধ। এ ইউনিয়নে বহু গুণী মানুষ জন্মালেও এখানে দু’টি ওয়ার্ড রয়েছে যেখানে কোন প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই।
এ ইউনিয়নে একটি রাস্তার জন্য ৩টি ওয়ার্ডের ২৫ হাজার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। রাস্তার অভাবে ইউনিয়ন পরিষদে আসতে তাদের কষ্টের শেষ থাকে না। চান্দ্রা-টুবগী রাস্তাটি প্রশস্থ এবং পাকা করা ৭,৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের জনগনের প্রাণের দাবী। চান্দ্রা বাজার এবং ইউনিয়ন পরিষদে আসার একমাত্র রাস্তা এটি। রাস্তাটি নদী এবং চরে আস্তে আস্তে গিলে খাচ্ছে। কোথায়ও কোথায় রাস্তার দুই পাশ ভেঙ্গে সরু আইলে পরিনত হয়েছে। রাস্তাটি হলে চান্দ্রার মানুষ অতি অল্প সময়ের মধ্যে জেলা সদর চাঁদপুরেও পৌঁছতে পারবে। এখানে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ২০টি মাছের ঘের রয়েছে। এই ঘেরের কারণে রাস্তা টিকিয়ে রাখা যাচ্ছে না। ঘটনাস্থালে গেলে জানা যায়, মোশারফ হোসেন মানিক চৌধুরীর নিজেরই ৮/১০ টি ঘের রয়েছে। সেকদী-মদনের গাঁও ব্রিজের পশ্চিম অংশ ২০০৪ সালে কার্পেটিং এর কাজ শেষ হয়। রাস্তা যখন ভালো ছিলো তখন এ পথটি ব্যবহার করতো হাজার হাজার মানুষ। বর্তমানে রাস্তাটির অধিকাংশ অংশ মাছের ঘেরে হেলে পড়েছে। সড়কটি ভেঙ্গে যাওয়ায় এখন একটি রিক্সাও যাতায়াত করতে পারছে না। সেকদী-মদনেরগাঁও ব্রিজের পূর্ব অংশ চান্দ্রাবাজার পর্যন্ত সড়কটি এখন আইলে পরিণত হয়েছে। এখানে অতিতে রাস্তা ছিলো বলে মনে হয় না।
সেকদী ও মদনেরগাঁও এর বাসিন্দা ইয়াছিন, মোমিন তপাদার ও দেলোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন,‘রাস্তার দুই পাশেই প্রায় বিশটি মাছের ঘের রয়েছে। অপরিকল্পিতভাবে ঘেরগুরো তৈরী করার কারণে রাস্তাগুলো ভেঙ্গে গেছে। যদি সাইড ওয়াল দেওয়া হতো, তাহলে রাস্তাটি ঠিক থাকতো।’ তারা আরো বলেন- ধানুয়া, প্রত্যাশী, শোভান এবং বাগড়া বাজারের লোকজনও রাস্তাটি ব্যবহার করতো। প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধিদের অবহেলা এবং নজরদারী না থাকার কারনে এমন অবস্থা হয়েছে।
৭নং ওয়ার্ড মেম্বার মো.মানছুর খান এ প্রতিনিধিকে বলেন,‘মাছের ঘেরের কারনে রাস্তাটি নষ্ট হয়ে গেছে। ওরা প্রভাবশালী। আমাদের কথা শুনে না।’
ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো.শফিকুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন,‘আমার ইউনিয়নের অধিকাংশ রাস্তাই কাঁচা। তবে চান্দ্রা টু টুগবি রাস্তাটির জন্য আমি প্রস্তাব দিয়েছি। এরাস্তাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ তিন ওয়ার্ডের প্রায় ২০ হাজার মানুষ বসবাস করছে। এ রাস্তার অভাবে তারা ইউনিয়ন পরিষদ এবং বাজারে আসতে পারছে না।’ তিনি আরো বলেন,‘ইউনিয়ন পরিষদ ভবনটিও করা দরকার।’
উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবরার আহম্মদ এ প্রতিনিধিকে বলেন,‘পুকুর এবং মাছের ঘের রাস্তা নষ্ট করার অন্যতম প্রধান মাধ্যম। বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষ আমলে নিয়েছেন এবং আমাদেরকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। আমরা সে অনুযায়ী কাজ করছি। ফরিদগঞ্জ বিশাল এরিয়া। তাই একটু সময় লাগবে। আমরা সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নিবো।’